অনলাইন জুয়া নয়, মৎস্য চাষের লোকসানে ঋণগ্রস্ত: পরিবারের দাবী
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মির্জাপুর গ্রামের কৃতি সন্তান এবং খড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, একসময়ের সফল মৎস্য চাষী গনেশ মন্ডলেকে নিয়ে সম্প্রতি অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে কোটি টাকার ঋণে জর্জরিত হওয়ার যে গুজব ছড়িয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে তার পরিবার। মূলত মৎস্য চাষে বিপর্যয় এবং আকস্মিক বন্যার কারণে তিনি বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার ভাতিজা।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি অত্যন্ত সম্মানীয় একজন ব্যক্তি এবং এলাকার গর্ব। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি খড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। এমন একজন ব্যক্তিকে জড়িয়ে এ ধরনের মিথ্যাচার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সামাজিক সম্মানহানির অপচেষ্টা বলে মনে করছে তার পরিবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার ভাতিজা ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, “আমার কাকু আমাদের গর্ব। তিনি তার জীবনকালে খড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তুলেছেন। তার নামে আপনারা যে গুজব রটাচ্ছেন, তিনি নাকি অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে কোটি টাকার ঋণ করেছেন, তা পুরোপুরি মিথ্যা। আমরা তার কাছের মানুষ, আমরাই সবটা ভালো জানি।”
তিনি আরও জানান, “কাকু মূলত মৎস্য চাষ করতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পাঁচটি বড় ঘের নিয়ে তিনি কৈ মাছ চাষ শুরু করেছিলেন। প্রথম দিকে বেশ ভালো লাভও করেছিলেন। কিন্তু পরের বছর মাছে এক ধরনের ভাইরাস আক্রমণ করে, যার ফলে প্রতিটি মাছের গায়ে ঘা হয়ে যায়। এতে তার প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মতো লোকসান হয়। মূলত সেখান থেকেই তার আর্থিক ক্ষতির শুরু।”
পরবর্তী বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। তার ভাতিজা বলেন, “এর পরের বছরে ভয়াবহ বন্যার কারণে তার সব ঘের তলিয়ে যায় এবং সমস্ত মাছ ভেসে যায়। এতে তিনি আরও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির শিকার হন। একের পর এক এমন বিপর্যয়ের কারণেই তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন।”
এলাকার কিছু মানুষ ও গণমাধ্যমের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমি সকল মিডিয়াকে বলব, আপনারা কেন এই মিথ্যা প্রচার করছেন? আপনারা তো ঘটনাস্থলে একবারও আসেননি। কিছু অসামাজিক লোকের কাছে শুনেই আপনারা নিউজ করেছেন। এটি আমাদের পরিবারের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক।”
পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকাবাসী এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে এ ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য এবং কোনো সংবাদ প্রকাশের আগে সত্যতা যাচাই করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। একজন সম্মানীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন ভিত্তিহীন অপপ্রচার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।